নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন এই মামলার অন্যতম আসামি। রায়ে যদি তিনি দণ্ডিত হন তাহলে তিনিই হবেন বাংলাদেশের প্রথম দণ্ডিত প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদও জনতা টাওয়ার দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাবরণ করেছিল। এই মামলার রায় যাই হোক না কেন, এটা আমার বিবেচনায় বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক ঘটনা। আমাদের সংবিধানে বলা হয়েছে, ‘আইন সবার জন্যই সমান।’ কিন্তু প্রায়ই আমরা দেখি আইন গরীবের জন্য একরকম, ধনীর জন্য অন্যরকম। টাকা থাকলেই আইন, বিচার ও ন্যায়নীতির বাইরে যাওয়া যায় এমন একটা বিশ্বাস বাংলাদেশে প্রবল। এদেশের অধিকাংশ মানুষই মনে করে আইন শুধু সাধারণ মানুষের জন্য, ক্ষমতাবানদের জন্য নয়। -এই রায় এরকম হতাশাজনক ধারণাগুলোর ওপর একটি বড় আঘাত। বেগম খালেদা জিয়ার মতো প্রচণ্ড প্রতাপশালী একজন রাজনীতিবিদকেও দুর্নীতির দায়ে আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এটা একটা বড় ঘটনা। সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর, বেগম জিয়ার দুর্নীতির বিচার- আইনের শাসনের পথে বাংলাদেশের আরেক ধাপ অগ্রযাত্রা। বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি আমাদের দেশে ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর থেকে শুরু হয়েছিল, সেখান থেকে যে আমরা কিছুটা হলেও বেরিয়ে আসতে পেরেছি-এই বিচার তার এক বড় উদাহরণ।
বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পুরোনো। দেশের অভিজাত নাগরিক সম্প্রদায়, যারা নিজেদের ‘সুশীল সমাজ’ বলতে পছন্দ করেন, তারা মনে করেন, বাংলাদেশের সর্বনাশের মূলে রাজনীতিবিদদের লাগাম ছাড়া দুর্নীতি। এই অভিযোগ যে একেবারেই অসত্য তা নয়। কিন্তু এরকম প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য হলো বিরাজনীতিকরন। রাজনীতিবিদদের হেয় করে একটি কৃত্রিম শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে তাতে নেতৃত্ব দেওয়া এদেশের সুশীল সমাজের এক পুরোনো আকাঙ্ক্ষা। এজন্যই প্রতিটি গণতান্ত্রিক সরকারের মেয়াদান্তে আমাদের সুশীলরা ব্যাপক চিৎকার চেঁচামেচি করেন। এসব কথাবার্তায় প্রায় পুরোটাই রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা। বাংলাদেশও পালাক্রমে আওয়ামী লীগ , বিএনপি ক্ষমতায় থাকলেও ‘দুর্নীতি প্রসঙ্গটি বক্তৃতা-বিবৃতির মধ্যেই রয়ে গেছে।’ ক্ষমতাসীন কোনো দলই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ হাজির করে না। ব্যাপারটা এমন যে ‘কাক কাকের মাংস খায় না’ যেমন। এক্ষেত্রে সম্ভবত বর্তমানে সরকার এক বিরল ব্যতিক্রম। কাল আদালতে যে মামলার রায় হবে, সেই মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল ওয়ান-ইলেভেনের অনির্বাচিত সরকারের সময়ে।‘ রাজনীতি দুর্নীতিতে ডুবে আছে’ এমন তত্ত্ব দিয়েই নামজাদা সুশীলদের পৃষ্ঠপোষকতায় সেনা সমর্থিত ওই ওয়ান ইলেভেন সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। তখনো সুশীল সমাজ বলেছিল, রাজনীতিবিদরা তাঁদের দুর্নীতির বিচার করবে না, কাজেই ‘এখনি সময়’। ওয়ান – ইলেভেন সরকার বিদায়ের পর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন তাদের আমলে করা মামলা গুলো বোধ হয় হিমঘরে চলে যাবে। কিন্তু সরকার দল নির্বিচারে সব যৌক্তিক মামলা অব্যাহত রেখেছে। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মহিউদ্দিন খান আলমগীর, ব্যরিস্টার নাজমূল হুদার মামলা বাধাহীন ভাবে প্রবাহিত হয়েছে। এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিচারও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। অর্থাৎ রাজনীতিবিদ হলেই তিনি আইন এবং বিচারের বাইরে – এই ধারণা লোপ পেতে শুরু করেছে। আমি মনে করি, এটা সুশাসন, আইনের শাসনের ক্ষেত্রে এক বড় অর্জন। তবে রায়ের আগে ওই সুশীল সমাজের নীরবতায় আমি হতবাক না হয়ে পারছি না। কোথায় আমাদের প্রিয় সম্পাদকদ্বয় মাহফুজ আনাম এবং মতিউর রহমান? যারা রাজনীতির দুর্নীতি নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করেন। তাদের ‘স্বপ্নের সরকারের’ সময়ে করা এক মামলা যে সমাপ্তির পথে তারা কি আনন্দিত নন? একটি প্রধান দলের শীর্ষনেতা যে বিচারের শেষ বিন্দুতে দাঁড়িয়ে এতে কী তারা মুগ্ধ নন? নাকি আসামি বেগম জিয়ার জন্য তারা মর্মাহত?
কোথায় আমাদের প্রিয় অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। যেকোনো বিষয়ে রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে সোচ্চার এই অর্থনীতিবিদ, এই বিচারকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
কোথায় সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন? যিনিই আইন উপদেষ্টা থাকা অবস্থায় এই মামলা হয়েছিল। তাঁর মামলা পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে, তিনি নীরব কেন? টিআইবির নির্বাহী পরিচালক তো সবকিছুর মধ্যেই দুর্নীতির গন্ধ পান। সুশাসনের জন্য দুর্নীতির মামলা বিচার জরুরি এমন কথা তো তার মুখ থেকে প্রায়ই শুনি। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী আইনের আওতায় এলেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক এটাকে কি চোখে দেখেন, জাতি তা জানতে চায়।
একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার রায় বাংলাদেশের জন্য এক অভূতপূর্ব ঘটনা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে এটি এক বড় বার্তা। অথচ আমি খুবই দুঃখিত এবং লজ্জিত যে সুশাসনের পক্ষে আমাদের বীর সুশীল যোদ্ধারা এ ব্যাপারে খামোশ। তারা কি বেগম জিয়ার জন্য কষ্ট পাচ্ছেন? তাদের মধ্যের কোনো কি কান্না জমেছে? একটু হাইপোথিটিক্যাল আলোচনা সূত্র ধরে লেখাটি শেষ করতে চাই। ধরা যাক, বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী, এই রায় দেওয়া হচ্ছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। এখন কি এই সুশীলরা মৃদু হেসে বলবেন না, ‘এটা আসলে গণতন্ত্রের জন্য এক মাইলফলক।’ এখন কি তাঁদের মনের কোনে বেজে উঠতো না, ‘মারহাবা! মারহাবা!’
Read in English- http://bit.ly/2E9XjJh
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।