X
শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪
২৭ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও 'অভিবাসন দশক' ঘোষণার দাবি জানালো রামরু

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:৪৮আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:৫৯

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেরন কেন্দ্রে রামরুর অভিবাসন ও সোনার মানুষ সম্মিলন ২০১৯ এর অতিথিরা

আবারও ২০২০ থেকে ২০২৯ সালকে অভিবাসন দশক ঘোষণা করে নারী ও পুরুষ অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে রেফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)। রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অভিবাসন ও সোনার মানুষ সম্মিলন ২০১৯-এ এই দাবি জানান রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী।  এর আগে অভিবাসন ও সোনার মানুষ সম্মিলন ২০১৮তে এই দাবি প্রথমবারের মতো তুলে সংস্থাটি।

ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, গতবার আমরা যে অনুষ্ঠান করেছিলাম সেখানে দাবি করেছি ২০২০ থেকে ২০২৯-এই দশ বছরকে অভিবাসন দশক ঘোষণা করা হোক। এই একই দাবি এবারও আমরা করছি, কারণ একটা অভিবাসন দশক ঘোষণা করা হলে কতগুলো কাজ যারা বিদেশ যাচ্ছে তাদের জন্য গুছিয়ে দিলাম। যাতে তারা প্রতারণার শিকার না হয়। সে যাতে ফিরে এসে তার আয় ভালো খাতে ব্যয় করতে পারে। শুধু এইটুকু অভিবাসনের কাজ নয়। অভিবাসনের কাজ হচ্ছে, তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা। যাতে করে আমরা যে দীর্ঘদিন ধরে অপেশাদার ও অদক্ষ লোক পাঠাচ্ছি তার বদলে আমরা যেন দক্ষ কর্মী পাঠাতে পারি।

তিনি আরও বলেন, বিদেশে নারী কর্মীরা যে ধরনের নিগ্রহ, নির্যাতনের শিকার হয় তার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক পরিসরে কাজ করতে হয়। আন্তর্জাতিক পরিসরে যে বহুপাক্ষিক ফোরামগুলো আছে, সেখানে আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে। একজন কর্মীর যে বছরে একবার ছুটি প্রাপ্য, সেটা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের সেইসব জায়গায় গলা তুলতে হবে। গৃহের ভেতরে কাজ করা একজন নারী শ্রমিক শ্রম আইনের আওতায় আসবে না এটা আমরা আর কতকাল শুনে যাবো! যার জন্য আমাদের এই সম্মিলনের আয়োজন।

অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই লক্ষ্যমাত্রার ১৭টি অভিষ্ট আমাদের অর্জন করতে হবে। এটি একদিন থেকে বৈশ্বিক অভিষ্ট, কিন্তু অন্যদিক থেকে আমরা যদি বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে চাই, যেখানে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন থাকবে, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি থাকবে, অর্থনৈতিক প্রগতি থাকবে--এই তিনটির যে সংমিশ্রণ, অভীষ্টতে কিন্তু তাই বলা আছে। অভিবাসীরা অর্থনীতিতে যে অবদান রাখছেন, সেটার জন্য আমরা যদি একটা ভালো পরিবেশ করতে পারি তাহলে ১৭টি অভীষ্টের মধ্যে ১১টি অভীষ্ট অর্জন সহজ হবে। আমরা যদি অভিবাসন দশক ঘোষণা করতে পারি, ২০৩০-এ কিন্তু টেকসই লক্ষ্যমাত্রার সময় শেষ হবে। দশটা বছর আমরা টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য অভিবাসন খাতকে কীভাবে ব্যবহার করতে পারি, তা আজকের আলোচনায় উঠে এসেছে।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব সেলিম রেজা বলেন, রামরুর গবেষণায় যেসব তথ্য আসে সেগুলো কাজে লাগিয়ে সুফল পাওয়া যায়। কয়েকদিন আগের একটি গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে , আর্বিটেশন এর জন্য একজন কর্মীকে ঢাকায় আসতে হতো। আমি তথ্যের ভিত্তিতে আমার ক্ষমতায় বিকেন্দ্রীকরণ করেছি। যশোরের একজন কর্মীকে অর্বিটেশনের জন্য কিন্তু এখন ঢাকায় আসতে হয় না। আমি আমার ক্ষমতা জেলা পর্যায়ে দিয়ে দিয়েছি। যার কারণে যে কর্মী ভুক্তভোগী হয়েছে সেই প্রতারক যেখানেই থাকুক না কেন আর্বিটেশনের জন্য তাকে ভুক্তভোগীর জেলায় যেতে হবে। আমরা কিন্তু রামরুর গবেষণালব্ধ তথ্যের ভিত্তিতে এই কাজটি করছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা অভিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের কমিটমেন্ট এই দেশের জন্য, এই দেশের জনগণের জন্য। মানুষের জন্য যেটা সুবিধা, আমাদের সেটাই করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা শুধু রেমিট্যান্সের জন্য হাততালি দিচ্ছি। কিন্তু প্রবাসীরা যখন বিমানবন্দরে আসছেন তারা নেতিবাচক আচরণের শিকার হচ্ছেন। অভিবাসীদের সঙ্গে মানবিক ব্যবহারের জায়গাটি আরও উন্নত করতে হবে। কর্মসংস্থানের জন্য নতুন বাজার সন্ধানেও জোর দিতে হবে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে অভিবাসন প্রক্রিয়া এখনও অনেক দীর্ঘ এবং ঢাকাকেন্দ্রিক। এই খাতটি অনানুষ্ঠানিক ব্যক্তি নির্ভর। ৯০ শতাংশ ব্যক্তিই অনানুষ্ঠানিক ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে বিদেশে যায়। যারা বিদেশ যায় তাদের শতভাগকে দালালির ওপর নির্ভর করে যেতে হয়। অন্য দেশের নাগরিকদের তুলনায় বাংলাদেশিদের ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি অর্থ খরচ করে বিদেশে যেতে হয়।

তিনি আরও বলেন,  ফ্রি ভিসা বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে অদৃশ্যভাবে প্রতিবছর ২ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হচ্ছে। ব্যক্তিপর্যায়ে যাদের ভিসা সংগ্রহের ক্ষমতা আছে এবং যারা দালালদের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করেন তাদের জবাবদিহিতা ও আইনের আওতায় আনতে হবে।

এসময় আলোচনায় আরও অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এর বাংলাদেশ শাখার পরিচালক ড. সেলিম উল হক, প্রকাশের আইবিপি ম্যানেজার শিরিন লিরা প্রমুখ।

 

/এসও/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যুদ্ধবিরতি আলোচনা ব্যর্থ, পূর্ব রাফাহতে ইসরায়েলের হামলা শুরু
যুদ্ধবিরতি আলোচনা ব্যর্থ, পূর্ব রাফাহতে ইসরায়েলের হামলা শুরু
এ বছরও হজযাত্রী কমেছে চট্টগ্রামে
এ বছরও হজযাত্রী কমেছে চট্টগ্রামে
চতুর্থ ধাপের ভোটে ৭৩৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল
চতুর্থ ধাপের ভোটে ৭৩৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল
চাহিদার চেয়ে পশু বেশি, কিনতে হবে বেশি দামে
রাজশাহীতে প্রস্তুত চার লাখ ৬৬ হাজার কোরবানির পশুচাহিদার চেয়ে পশু বেশি, কিনতে হবে বেশি দামে
সর্বাধিক পঠিত
আর্জেন্টাইন ক্লাবকে জামাল ভূঁইয়ার ২ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ ফিফার
আর্জেন্টাইন ক্লাবকে জামাল ভূঁইয়ার ২ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ ফিফার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানান ভুল লিখলো সওজ, চলছে সমালোচনা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানান ভুল লিখলো সওজ, চলছে সমালোচনা
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: আজিজ মোহাম্মদসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: আজিজ মোহাম্মদসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন
চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় আহত পাইলটের মৃত্যু
চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় আহত পাইলটের মৃত্যু
দেশের ব্যাংকগুলো ধ্বংস হচ্ছে, তার উদাহরণ এনআরবিসি: জিএম কাদের
দেশের ব্যাংকগুলো ধ্বংস হচ্ছে, তার উদাহরণ এনআরবিসি: জিএম কাদের