ইমাম হুসাইন (রা:)-এর শাহাদাত বরণের জন্য এয়াযীদের জরিত ছিল

<p dir="ltr">ইমাম হুসাইন (রা:)-এর শাহাদাত বরণের জন্য  এয়াযীদের জরিত ছিল<br> <br>এয়াযীদ কি ইমাম হুসাইন (রা:)-কে শহীদ করার জন্যে তার সৈন্যদের হুকুম দিয়েছিল? কেন দিয়েছিল? সে কি জানতো না যে হযরত ইমাম (রা:) আমাদের মহানবী (দ:)-এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র? সে কি তাহলে এর জন্যে দায়ী নয়?<br>জবাব<br>এ সব প্রশ্নের উত্তরের দুটি অংশ রয়েছে: প্রথমতঃ আমাদের প্রমাণ করতে হবে এয়াযীদ-ই তার সৈন্যদের আদেশ দিয়েছিল ইমাম হুসাইন (রা:)-কে হত্যা করার জন্যে। দ্বিতীয়তঃ হযরত ইমাম (রা:) মহানবী (দ:)-এর প্রিয় দৌহিত্র, এ বিষয়টি জানা সত্ত্বেও এয়াযীদ কীভাবে এটি করতে পারলো তা নিয়ে আলোচনা করবো।<br>১/ - ইমাম হুসাইন (রা:)-কে শহীদ কারা করেছিল?<br>হযরত ইমাম (রা:)-কে এয়াযীদ-ই যে হত্যা করেছিল, তা স্পষ্ট ব্যাখ্যা করতে এ কথা বলার প্রয়োজন নেই যে সে সরাসরি গিয়ে নিজ হাতে হত্যা করেছিল; বরং তারই অধীনস্থ রাজন্যবর্গ তার নির্দেশ মোতাবেক এই পাপকার্য সংঘটন করে। আরেক কথায়, উবায়দউল্লাহ ইবনে যিয়াদ, উমর ইবনে সাআদ ও শিমর ইবনে যিল-জওশানের তরবারি দ্বারা এয়াযীদ হযরত ইমাম হুসাইন (রা:)-কে শহীদ করে।<br>এই প্রসঙ্গে ইসলামী উলামাবৃন্দের কিছু উদ্ধৃতি এখানে তুলে ধরা হলো:<br>ইমাম আল-যাহাবী লেখেন, “ইমাম হুসাইন (রা:) কুফা অভিমুখে রওয়ানা দেন। এমতাবস্থায় এয়াযীদ কুফার শাসক উবায়দউল্লাহ ইবনে যিয়াদকে পত্র লেখেন এই মর্মে যে, ইমাম হুসাইন (রা:) কুফার দিকে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে তোমার নগরীকে বেছে নিয়েছেন; আর এটি তোমার শাসনকালের মধ্যে পড়েছে। আর তুমিও আমার মনোনীত প্রতিনিধিদের একজন। অতএব, নিজেকে মুক্ত করো, নতুবা দাসত্ব বরণ করো। এই পত্রের ফলশ্রুতিতে ইবনে যিয়াদ ইমাম সাহেব (রা:)-কে শহীদ করে এবং তাঁর কাটা শির মোবারক এয়াযীদের কাছে পাঠায়।<br>ইমাম সৈয়ুতী (রহ:) লেখেন, এয়াযীদ তার প্রাদেশিক শাসনকর্তা উবায়দউল্লাহ ইবনে যিয়াদকে ইমাম হুসাইন (রা:)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং তাঁকে শহীদ করার অাদেশ দেয়। [তারিখুল খোলাফা, ১৯৩ পৃষ্ঠা, দারুল ফিকর, বৈরুত সংস্করণ]<br>আলী ইবনে আসীর নিজ ‘আল-কামিল ফীত্ তারিখ’ পুস্তকে বর্ণনা করেন যে ইবনে যিয়াদ মুসাফি ইবনে শারিহকে এক পত্রে লেখেছিল, আমি হুসাইন (রা:)-কে হত্যা করেছি, কেননা তাঁকে মারার বা আমার নিজেকে মারার এই দুটি পথের মধ্যে একটিকে বেছে নেয়ার স্বাধীনতা আমাকে দেয়া হয়েছিল। আমি হুসাইন (রা:)-কে হত্যা করি।<br>সিবত্ ইবনে জাওযীর ’তাযকেরাতুল খাওয়াস’ পুস্তকের ১৪৮ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে, যখন নবী-বংশের সদস্যবৃন্দকে বন্দী করে সিরিয়ায় নিয়ে আসা হলো, তখন এয়াযীদ বল্লো, “উটের পালকিতে চড়ে যবে বন্দীরা এলো, একটি কাক কা কা রবে ডেকে উঠলো (আরবে অশুভ লক্ষণ)। আমি বল্লাম, ওহে কাক, ডাকো আর না-ই ডাকো, আমি মহানবী (দ:)-এর ওপর প্রতিশোধ নিতে পেরেছি কো।”<br>এয়াযীদ কেন ইমাম হুসাইন (রা:)-কে হত্যা করলো?<br>এয়াযীদ ভালভাবেই জানতো ইমাম হুসাইন (রা:) আমাদের মহানবী (দ:)-এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র, যাঁকে তিনি খুবই আদর করতেন। কিন্তু সে তো ছিল না কোনো ঈমানদার এবং তার বেঈমানী সম্পর্কে সবাই জানতেন। মহান হাম্বলী আলেম আবূল ফারাজ ইবনে আল-জাওযী নিজ আল-রাদ্দ আলাল মুতা’আসসিব আল-আনিদ কেতাবে এয়াযীদের কিছু দ্বিচরণ পংক্তি উদ্ধৃত করেন:<br>”যদি মোহাম্মদ (দ:)-এর ধর্মে মদ্যপান হয় নিষিদ্ধ,<br>তবে তা হতে দাও,<br>আমি গ্রহণ করে নেবো খৃষ্টধর্ম।”<br>”এই দুনিয়া-ই একমাত্র, এরপর আর কিছু নেই,<br>তাই দুনিয়ার আনন্দ-ফূর্তি থেকে রবো না বঞ্চিত।”<br>এয়াযীদ যে মদ্যপান করতো, তার প্রমাণ রয়েছে ইবনে আল-এমাদ কৃত ‘শাতারাত আল-তাহাব’ (৩য় খণ্ড, ১৭৯ পৃষ্ঠা) ও আলী ইবরাহীম হাসান প্রণীত ‘তারিখ আল-ইসলাম আল-আম (৩য় সংস্করণ, ২৭০ পৃষ্ঠা) গ্রন্থগুলোতে। এ কথা বলা হয় যে মদ্যপান অন্যান্য পাপের চাবিকাঠি। এয়াযীদ অন্যান্য পাপকর্মেও লিপ্ত ছিল। এ ব্যাপারে তার তো কোনো অনুশোচনা ছিলই না, বরং সে এ আচরণকে সম্মান মনে করতো।<br></p>

ইমাম হুসাইন (রা:)-এর শাহাদাত বরণের জন্য এয়াযীদের জরিত ছিল

ইমাম হুসাইন (রা:)-এর শাহাদাত বরণের জন্য  এয়াযীদের জরিত ছিল এয়াযীদ কি ইমাম হুসাইন (রা:)-কে শহীদ করার জন্যে তার সৈন্যদের হুকুম দিয়েছিল? কেন দ...

আরও পড়ুন »

ইয়াজিদ বিষয়ে ইমাম আজম আবু হানিফা রহ. এর নীরবতাই ইয়াজিদের প্রতি ইমামে আজমের চরম ঘৃণা প্রকাশ।

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div dir="ltr" style="text-align: justify;"> ইয়াজিদ বিষয়ে ইমাম আজম আবু হানিফা রহ. এর নীরবতাই ইয়াজিদের প্রতি ইমামে আজমের চরম ঘৃণা প্রকাশ।</div> <div dir="ltr" style="text-align: justify;"> <br /></div> <div dir="ltr" style="text-align: justify;"> ইয়াজিদের বিষয়ে ইমামে আজম রহ. এঁর নীরবতাকে কেন্দ্র করে একটি ভুল ধারণা রয়েছে। ইমামে আজম রহ. এঁর ইয়াজিদ বিষয়ে এই নীরবতা ইয়াজিদের কুফরকে স্পষ্ট করে তোলে। তাঁর এই নীরবতাই ইয়াজিদের কুফরী বিষয়ে আমাদের উপলব্ধীকে বদ্ধমূল করে। ইমাম যায়দ বিন আলী বিন হুসাইন রহ. উমাইয়া শাসক হিশামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হলে ইমামে আজম আবু হানিফা রহ. ফতোয়া জারি করেন যে, ইমাম যায়দ বিন আলি বিন হুসাইন রহ. এঁর পক্ষে লড়াই রাসূলুল্লাহ্ এঁর পক্ষে বদর যুদ্ধে লড়াই করার অনুরূপ। এখানে প্রতীয়মান হচ্ছে ইমামে আজম রহ. যুদ্ধে ইমাম যায়দ বিন আলি রহ. এঁর বিরুদ্ধে উমাইয়া শাসক হিশাম বিন আব্দুল মালিকের অবস্থানকে কুফ্ফারের সাথে তুলনা দিয়েছেন। কাজেই ইমামে আজম রহ. এঁর নীরবতাকে আমরা ইয়াজিদের বিপরীতে কুফরীর প্রতি সমর্থন ধরে নিতে পারি যদিও তিনি সরাসরি তা বলেন নি। হিশামের তুলনায় ইয়াজিদ চরম জঘন্য, কুখ্যাত ও নিন্দনীয় ছিল। </div> <div dir="ltr" style="text-align: justify;"> ইমাম আবু হানিফা রহ. এঁর সময়কালে বিশেষত শিয়ারা ইয়াজিদকে কাফির বলে নিন্দা ও অভিশাপ দিত। ইমামে আজম রহ. যদি তা সমর্থন না করতেন তাহলে তিনি ইয়াজিদকে উদ্দেশ্য করে কাফির নিন্দাবাদ ও অভিশাপের দোয়া করার তৎকালিন ব্যাপক চর্চার বিরোধীতা করে শিয়াদের খণ্ডনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন। অথচ তিনি তখন নীরব ভূমিকা পালন করেন। সুতরাং তাঁর নীরবতাকে ইয়াজিদের কুফরী বা তার প্রতি অভিশাপের দোয়া করার বিষয়কে প্রত্যাখ্যান না করে সমর্থনকে দৃঢ় করে।</div> <div dir="ltr" style="text-align: justify;"> [সূত্রঃ আবু জুহরা, হায়াত ওয়া আসর, পৃষ্ঠা ৩৬-৩৭]।</div> <div dir="ltr" style="text-align: justify;"> ইমাম আবু হানিফা রহ. যদি হিশামের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে না জানতেন তবে তিনি কখনো হিশামকে আবু লাহাব আর আবু জাহেলের সাথে তুলনা করতেন না। অতএব, ইমাম আজম রহ. এঁর আক্বিদা হচ্ছে চরম অবাধ্যতা ইমানকে বরবাদ করে দেয়।</div> <div dir="ltr" style="text-align: justify;"> <br /></div> <div dir="ltr" style="text-align: justify;"> প্রিয় পাঠক, সুন্নি নামধারী ইয়াজিদ প্রেমিকেরা ফিকাহ্ শাস্ত্রের একটি নীতি বা উসূল খুব ভাল করেই জানে যে, কোন বিষয়ে ফিকাহ্ শাস্ত্রে "সুকুত বা নীরবতা" কে সে বিষয়ে "হ্যাঁ বা সম্মতি" কিংবা সে বিষয়টি "অনুমোদিত" বলে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু এ প্রেক্ষাপটে সুন্নি নামধারী সে সকল এজিদ প্রেমিকেরা ফিকাহ্ শাস্ত্রের এই উসুলকে নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য পাশ কাটিয়ে "না বা অসম্মতিসূচক" কিংবা "অননুমোদিত" বলে গণ্য করে ফেত্না ছড়াতে ব্যস্ত রয়েছে।</div> </div>

ইয়াজিদ বিষয়ে ইমাম আজম আবু হানিফা রহ. এর নীরবতাই ইয়াজিদের প্রতি ইমামে আজমের চরম ঘৃণা প্রকাশ।

ইয়াজিদ বিষয়ে ইমাম আজম আবু হানিফা রহ. এর নীরবতাই ইয়াজিদের প্রতি ইমামে আজমের চরম ঘৃণা প্রকাশ। ইয়াজিদের বিষয়ে ইমামে আজম রহ. এঁর নীরবতাকে ...

আরও পড়ুন »

অভিশপ্ত এজিদ সম্পর্কেঃ

<p dir="ltr">অভিশপ্ত এজিদ সম্পর্কেঃ  <br>১/ আল্লামা ইবনুল জওযীর এজিদ বিরোধী কিতাটির ডাউনলোড লিঙ্ক <a href="https://archive.org/details/RadAlaMoteassebAnidMaaneZammeYazid">https://archive.org/details/RadAlaMoteassebAnidMaaneZammeYazid</a></p><p dir="ltr">২/ হযরত ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ) লিখেনঃ</p><p dir="ltr">قال يحيـى بن عبد الملك بن أبـي غنية أحد الثقات، ثنا نوفل بن أبـي عقرب ثقة قال: كنت عند عمر بن عبد العزيز فذكر رجل يزيد بن معاوية، فقال: قال أمير المؤمنين يزيد، فقال عمر: تقول أمير المؤمنين يزيد، وأمر به فضرب عشرين سوطاً  “</p><p dir="rtl">অর্থাৎঃ ইয়াহইয়া ইবনে আব্দিল মুলক্ বিন আবি গানিয়্যা যিনি ’সিকা (নির্ভরযোগ্য) বর্ণনাকারীদের একজন’, তিনি ‘সিকা’ বর্ণনাকারী নওফল বিন আবি আকরাব থেকে শুনেছেনঃ একবার খলীফা উমর ইবনে আবদিল আযীয (২য় উমর)-এর দরবারে মানুষেরা এয়াযীদ ইবনে মু’আবিয়া সম্পর্কে আলাপ করছিলেন। ওই সময় এক লোক এয়াযীদকে ‘আমীরুল মো’মেনীন’ (ঈমানদারদের শাসক) খেতাবে সম্বোধন করে। এটি শুনে খলীফা ২য় উমর (রাগান্বিত হয়ে) তাকে বলেন, <br>“তুমি এয়াযীদকে আমীরুল মো’মেনীন ডেকেছ?”<br>অতঃপর তিনি ওই লোককে ২০টি দোররা মারার হুকুম দেন।  <br>[সূত্রঃ ইমাম আসকালানী ‘তাহযিবুত্ তাহযিব’ খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩১৩।]</p><p dir="ltr">৩/ অভিশপ্ত ইয়াযীদ সম্পর্কে বিশ্ববিখ্যাত মুফাসসির ইমাম আলূসী রাহিমাহুল্লাহ এঁর অভিমত।<br>https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1861755877473182</p><p dir="ltr">৪/ এজিদকে আমীর বলার শাস্তিঃ<br>যাহাবী আরো লিখেছেন,<br>عن نوفل بن أبي الفرات ، قال : كنت عند عمر بن عبد العزيز فقال رجل : قال أمير المؤمنين يزيد ، فأمر به فضرب عشرين سوطا. <br>অর্থাৎঃ ‘নওফাল বিন ফুরাত বলেন, আমি উমর ইবন আবদুল আযিযের সাথে ছিলাম । তখন এক ব্যক্তি এজিদের ব্যাপারে বললো, ‘আমিরুল মুমিনিন ইয়াযিদ।’ এটি শুনে উমর ইবন আবদুল আযিয সে লোককে বিশটি চাবুক মারতে আদেশ দিলেন।’<br>[সূত্রঃ যাহাবী রচিত সিয়ারু আলামিন নুবালা, খ- ৪, পৃ- ৩৯।]</p><p dir="ltr">৫/ ক্বুরআ'নের বর্ণনায় আল্লাহ ও রসূলকে কষ্ট প্রদানকারী অভিশপ্ত এজিদ ও সহীহ হাদীসের কাঠগড়ায় পাপিষ্ঠ এজিদ সমাচার।<br>https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1863887707259999</p><p dir="ltr">৬/ আইয়ামে হাররা ও প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله و سلم) এঁর রওজা মুবারক থেকে আজানের আওয়াজ।<br>https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1864221343893302<br>___________ <br>মহান রব আমাদেরকে বাম-লীগ ও নাছেবী- খারেজীসহ এজিদের বর্তমান সকল প্রেতাত্মাদের অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করুন।</p>

অভিশপ্ত এজিদ সম্পর্কেঃ

অভিশপ্ত এজিদ সম্পর্কেঃ  ১/ আল্লামা ইবনুল জওযীর এজিদ বিরোধী কিতাটির ডাউনলোড লিঙ্ক https://archive.org/details/RadAlaMoteassebAnidMaaneZammeYa...

আরও পড়ুন »

অভিশপ্ত ইয়াজিদ কর্তৃক আইয়ামে হাররা বা মদিনা শরীফে আক্রমণ

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div dir="ltr"> অভিশপ্ত এজিদ কর্তৃক আইয়ামে হাররা বা মদিনা শরীফে আক্রমণ ও প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله و سلم) এঁর রওজা মুবারক থেকে আজানের আওয়াজ।</div> <div dir="ltr"> আইয়ামে হাররা এর সময় মসজিদে নববীতে তিন দিনের জন্য আজান দেয়া হয়নি। একামত ও দেয়া হয়নি। সায়ীদ বিন মুসাইয়াব (সাইয়্যিদুত তাবিয়ীন) মসজিদে নববী থেকে বের হতে পারেননি। (ঐ তিন দিন তিনি মসজিদে নববীতে অবস্থান করছিলেন)। তিনি (এ সময়) মসজিদে নববী থেকে এক ধরণের আওয়াজ শুনে নামাজের সময় অনুধাবন করতেন।<br />(অন্যত্র বলা হয়েছে, ঐ আওয়াজ ছিল আজানের ধ্বনি)।<br />রেফারেন্সঃ<br />১/ তাখরীজু আহাদীসিল মাসাবীহঃ ৫/২৩৬১।<br />মুহাদ্দিসঃ মুহাম্মাদ আল মানাওয়ী<br />হাদীসটি সহীহ।</div> <div dir="ltr"> ২/ সুনানে দারিমী<br />খন্ড-১, পেইজ নাম্বার-২২৮<br />হাদীস সহীহ।</div> <div dir="ltr"> আইয়ামে হাররা কী?<br />আইয়ামে হাররা ঐ দিন গুলোকে বলা হয়, যখন অভিশপ্ত ইয়াযীদের নির্দেশে মদীনা মুনাওওয়ারা আক্রমণ করা হয়েছিল। এ সময় তার নির্দেশে মদীনাতে হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ সব কিছু সংঘটিত করেছিল অভিশপ্ত ইয়াযিদের অভিশপ্ত বাহিনী। অনেক সাহাবীদেরকে এ সময় শহীদ করা হয়েছিল।<br />রেফারেন্সঃ<br />১/ আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ<br />ষষ্ট খন্ড<br />অধ্যায়ঃ আল ইখবারু আন ওয়াকআতিল হাররাহ।<br />২/<br />আত তাবারীঃ ৫/৪৮৪<br />৩/ আল কামিলঃ ৪/১১২<br />৪/ আল বিদায়াহঃ ৮/২১৮<br />এ ঘটনাকালে মুসলমানের রক্তে পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিল মদীনার রাস্তাগুলো।<br />মুসলমানের রক্ত গড়িয়ে গড়িয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওযা মোবারক পর্যন্ত পৌঁছেছিল।<br />মসজিদে নববী রক্তে ভরে গিয়েছিল। ১০০০০ মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছিল।<br />ধর্ষণের ফলে ১০০০ জারজ সন্তান জন্ম নিয়েছিল।<br />সুত্রঃ<br />আত তাযকিরাহ<br />ইমাম ইবনুল জাওযী<br />পেইজঃ ৬৩,১৬৩</div> <div dir="ltr"> হাররার দিন গুলোতে সায়ীদ বিন মুসাইয়্যাব (রাঃ) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রাওযা মুবারক থেকে নামাজের সময়গুলোতে আজানের আওয়াজ শুনতেন। এ সময় তিনি ছাড়া আর কেউ মসজিদে ছিলনা।<br />রেফারেন্সঃ<br />কিতাবুল ফারকি বাইনা আউলিয়া ইর রাহমানি ওয়া আউলিয়া ইশ শাইতানি<br />ইবনু তাইমিয়াহ<br />অধ্যায়ঃ কারামাতুস সাহাবাতি ওয়াত তাবিয়ীন।</div> <div dir="ltr"> - সায়ীদ বিন মুসাইয়াব কে ছিলেন?<br />সায়ীদ বিন মুসাইয়াব ছিলেন মদীনা মুনাওওয়ারার ফকীহদের মধ্য থেকে একজন। তিনি হাদীস, তাফসীর এবং ফিকহ সম্পর্কে অনেক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন।<br />রেফারেন্সঃ<br />কিতাবু শাযারাতিয যাহাবি ফী আখবারিম মিন যাহাবি<br />ইবনু ইমাদ হাম্বালী</div> <div dir="ltr"> তালহা বিন মুহাম্মাদ বলেন, হাররার দিন গুলোতে সায়ীদ বিন মুসাইয়াব মসজিদে নববীতে ছিলেন। কোথাও বের হন নাই। তিনি বলেছেন, যখন নামাজের সময় হত, আমি রাসুলের রাওযা হতে আজানের আওয়াজ বের হতে শুনতাম।<br />রেফারেন্সঃ<br />সিয়ারু আ’লামিন নুবালা<br />ইমাম যাহাবী।<br />আরো দেখুন,<br />১/দালাইলুন নুবুওওয়াহঃ৫০৯/৫১০<br />আবু নাঈম।<br />২/আত তাবাকাতুল কুবরা<br />ইবনু সা’দ (৫৮১৯)-৫:৬।<br />__________<br />এজিদের উপর, তার সহযোগীদের উপর, তার কর্মে সমর্থনকারীদের উপর অভিশাপ নিপতিত।</div> </div>

অভিশপ্ত ইয়াজিদ কর্তৃক আইয়ামে হাররা বা মদিনা শরীফে আক্রমণ

অভিশপ্ত এজিদ কর্তৃক আইয়ামে হাররা বা মদিনা শরীফে আক্রমণ ও প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله و سلم) এঁর রওজা মুবারক থেকে আজানের ...

আরও পড়ুন »

ইমাম হুসাইন (রা) এর হত্যায় ইয়াজিদের ভুমিকা :

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <br /> উমাইয়্যা বংশীয় খলিফা ইয়াযীদ ইবনে মু‘আবিয়া তার তিন বছরের শাসনামলে তিনটি বড় ধরনের অপরাধে লিপ্ত হয়েছিল।<br /> <br /> <br /> <ul style="text-align: left;"> <li>তার শাসনামলের প্রথম বছরে তার নির্দেশে ইমাম হুসাইন (আ.) সহ মহানবী (সা.)-এর পরিবারের পঞ্চাশজন শিশু, যুবক ও পৌঢ় ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়; </li> <li>দ্বিতীয় বছরে তার সেনাদল মদীনায় আক্রমণ চালায় এবং আশিজন সাহাবীসহ দশ হাজার লোককে হত্যা করে এবং এক হাজার মুসলিম নারীর শ্লীলতাহানি ঘটায়; </li> <li>তৃতীয় বছরে সে আবদুল্লাহ্ ইবনে যুবাইরকে দমনের উদ্দেশে মক্কায় আক্রমণের নির্দেশ দেয় ও তার সৈন্যরা পবিত্র কাবা গৃহে অগ্নিসংযোগ করে।</li> </ul> <br /> এ প্রবন্ধে আমরা খেলাফতের আসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ইয়াযীদ ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদাত পর্যন্ত তাঁকে হত্যার যে সকল প্রয়াস চালিয়েছিল, হত্যার নির্দেশ দিয়ে যে পত্রগুলো সে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট প্রেরণ করেছিল এবং তাঁকে হত্যার পেছনে তার ভূমিকা থাকার অন্যান্য দলিল নিয়ে কয়েকটি শিরোনামে আলোচনা করব।<br /> <br /> <br /> <span style="color: #660000;"><b><br /></b></span> <span style="color: #660000;"><b>১. </b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b><br /></b></span> <span style="color: #660000;"><b>মদীনার গভর্নরের প্রতি ইয়াযীদের নির্দেশ : ‘হুসাইন বাইআত না করলে তাকে হত্যা কর’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, ইয়াযীদ কেবল তার নেতৃত্বকে মেনে নেয়ার সাপেক্ষেই ইমাম হুসাইন (আ.)-কে হত্যা করা থেকে নিবৃত্ত হত। ঐতিহাসিক ইয়াকুবী লিখেছেন : ‘ইয়াযীদ মদীনার গভর্নর ওয়ালীদ ইবনে ওকবাকে এ মর্মে পত্র লিখে যে, যখন আমার পত্র তোমার হাতে পৌঁছবে তখন হুসাইন ইবনে আলী ও আবদুল্লাহ্্ ইবনে যুবাইরকে ডেকে পাঠাও এবং তাদের থেকে বাইআত (আনুগত্যের শপথ) গ্রহণ কর। যদি তারা অস্বীকার করে, তবে তাদের মস্তক বিচ্ছিন্ন করে আমার নিকট প্রেরণ কর।’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>এ নির্দেশের প্রেক্ষিতে ওয়ালীদ ইমাম হুসাইনকে স্বীয় প্রাসাদে ডেকে পাঠায়। ইমাম হুসাইন তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র আঁচ করে বনি হাশিমের যুবকদের সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। ওয়ালীদ ইমাম হুসাইনকে বাইআতের প্রস্তাব দিলে তিনি তার জবাবে বলেন : ‘হে আমীর! আমরা নবীর আহলে বাইত, রেসালতের খনি; আমাদের গৃহে ফেরেশতাদের আনা-গোনা হত, (তা ছিল) রহমত অবতীর্ণের ক্ষেত্র, মহান আল্লাহ্ সকল কল্যাণের শুরু করেছেন আমাদের থেকে এবং আমাদের মাধ্যমেই তার পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছেন। কিন্তু ইয়াযীদ হল দুষ্কৃতিপরায়ণ, মদ্যপায়ী, সে সম্মানিত ব্যক্তিদের হত্যাকারী এবং প্রকাশ্য পাপাচারী। সুতরাং আমার মত কেউ তার মত কারও হাতে বাইআত করতে পারে না।’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>এরূপ জবাব শুনে ওয়ালীদ নিশ্চুপ থাকলেও মারওয়ান ইবনুল হাকাম ইমাম হুসাইন (আ.)-কে হত্যার পরামর্শ দেয়। ওয়ালীদ ইসলামের বিধান মতে ইমাম হুসাইনকে হত্যা জায়েয নয় বলে তা করতে অস্বীকার করে। এ খবর ইয়াযীদের নিকট পৌঁছলে সে ওয়ালীদকে লিখে পাঠায় : ‘যখন আমার পত্র তোমার হাতে পৌঁছবে তখন দ্বিতীয়বারের ন্যায় মদীনার জনগণের নিকট বাইআত নিবে এবং আবদুল্লাহ্ ইবনে যুবাইরকে তার অবস্থায় ছেড়ে দাও। কারণ, সে আমাদের নিকট থেকে পালাতে পারবে না। কিন্তু হুসাইনকে হত্যা করে তার মাথা আমার নিকট পাঠিয়ে দাও। যদি তুমি তা কর, তবে তোমার জন্য উন্নত জাতের কিছু ঘোড়া ও আরো মূল্যবান অনেক উপহার পাঠাব।’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>কিন্তু ইয়াযীদের পত্র ওয়ালীদের নিকট পৌঁছার পূর্বেই ইমাম হুসাইন মদীনা ত্যাগ করেছিলেন।</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>এর কিছুদিন পরই ইয়াযীদ ওয়ালীদকে দুর্বলতার অভিযোগে পদচ্যুত করে। এর কয়েক মাস পর ইয়াযীদ একইভাবে ইমাম হুসাইনের দূত মুসলিম ইবনে আকীলের তৎপরতার বিপক্ষে কঠোর পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগে কুফার গভর্নর নোমান ইবনে বাশীরকেও পদচ্যুত করে।</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b><br /></b></span> <span style="color: #660000;"><b>২. </b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b><br /></b></span> <span style="color: #660000;"><b>ইমাম হুসাইনের উক্তি : ‘আমাকে তারা হত্যা করবেই’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>তাবারী বর্ণনা করেছেন যে, ইমাম হুসাইন (আ.) মক্কায় এক জনসমাবেশে লোকদের উদ্দেশ করে বলেন : ‘তোমরা কি জান, ইবনে যুবাইর কি বলছে?’ লোকেরা বলল : ‘না, আমরা জানি না। আল্লাহ্্ আমাদের আপনার জন্য উৎসর্গিত করুন।’ ইমাম হুসাইন বললেন : ‘ইবনে যুবাইর আমাকে এ মসজিদে অবস্থানের কথা বলেছে এবং দাবি করেছে যে, আমার জন্য সৈন্য সংগ্রহ করবে। কিন্তু আমি আল্লাহ্্র শপথ করে তোমাদের বলছি, আমার জন্য মক্কার এক বিঘত দূরে নিহত হওয়া এর অভ্যন্তরে নিহত হওয়া অপেক্ষা শ্রেয়। আল্লাহ্্র শপথ, যদি আমি আত্মগোপন করি এবং কোন গুহায়ও আশ্রয় গ্রহণ করি, তবু তারা আমাকে খুঁজে বের করা পর্যন্ত বিশ্রাম গ্রহণ করবে না এবং তারা আমার সাথে তা-ই করবে যা তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>এ বিষয়গুলো থেকে আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, ইমাম হুসাইন (আ.) বনি উমাইয়্যার বিদ্বেষের তীব্রতা ও তাঁকে হত্যার অসৎ উদ্দেশ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে অবহিত ছিলেন।</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b><br /></b></span> <span style="color: #660000;"><b>৩. </b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b><br /></b></span> <span style="color: #660000;"><b>ইয়াযীদ ইমাম হুসাইনকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>ইয়াকুবী বর্ণনা করেছেন : ‘হুসাইন (আ.) ইরাকের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন জানতে পেরে ইয়াযীদ কুফার গভর্নর হিসেবে উবাইদুল্লাহ্ ইবনে যিয়াদকে নিয়োগ দান করে এবং তাকে এ মর্মে পত্র লিখে পাঠায় : আমার নিকট খবর পৌঁছেছে যে, কুফার লোকেরা হুসাইনকে ইরাকে আসার আহ্বান জানিয়ে পত্র লিখেছে। আমি নিশ্চিত, সে কুফার দিকে যাত্রা করেছে... যদি তুমি তাকে হত্যা কর, তবে তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করেছ। আর যদি তা না কর, তবে আমি তোমাকে তোমার মৃত পূর্ব-পুরুষদের নিকট পাঠিয়ে দেব। সুতরাং সাবধান! এ সুযোগকে হাতছাড়া কর না।’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b><br /></b></span> <span style="color: #660000;"><b></b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>ইবনে আসাম বর্ণনা করেছেন : ‘হুর ইবনে ইয়াযীদ রিয়াহি, উবাইদুল্লাহ্ ইবনে যিয়াদকে লিখে পাঠায় যে, সে ইমাম হুসাইনকে কারবালায় অবরুদ্ধ করেছে। এখন তার করণীয় কী?’ ইবনে যিয়াদ জবাবে লিখে : ‘আমীরুল মুমিনীন ইয়াযীদ ইবনে মু‘আবিয়া পত্র মারফত আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, তিনি তার নির্দেশ পালন না করলে আমার সাথে যথেচ্ছ আচরণ, এমনকি আমাকে হত্যা করতেও কুণ্ঠাবোধ করবেন না।’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>এ ঐতিহাসিক বর্ণনাগুলো এ সাক্ষ্য প্রদান করে যে, ইয়াযীদ স্বয়ং উবাইদুল্লাহ্ ইবনে যিয়াদের প্রতি ইমাম হুসাইনকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল, এমনকি তার এ নির্দেশ পালন না করলে তাকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিল।</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b><br /></b></span> <span style="color: #660000;"><b>৪. </b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b><br /></b></span> <span style="color: #660000;"><b>ইবনে যিয়াদ ইমাম হুসাইনের বিষয়ে নিজের থেকে কখনই কোন পদক্ষেপ নেয়নি</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদাত পর্যন্ত ইয়াযীদ ও ইবনে যিয়াদের মধ্যে অবিচ্ছিন্নভাবে যোগাযোগ ছিল। কারণ, ইয়াযীদ তাকে নির্দেশ দিয়েছিল সে যেন সবসময় তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে এবং ছোট-বড় সব বিষয়েই তাকে পত্র (দূত) মারফত অবহিত করে। তাবারী লিখেছেন : ‘মুসলিম ইবনে আকীল এবং হানীকে হত্যার পর ইবনে যিয়াদ তাঁদের উভয়ের মাথা কেটে সিরিয়ায় ইয়াযীদের নিকট প্রেরণ করে। ইয়াযীদ তাদের কর্তিত মাথা দেখার পর বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়ে ইবনে যিযাদকে একটি পত্র লিখে। তাতে সে উল্লেখ করে : ‘আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, হুসাইন কুফার দিকে যাত্রা করেছে। তার সঙ্গে যারা যোগাযোগ রাখে তাদের প্রতি কড়া নজরে রাখ এবং তাদের শনাক্ত করার জন্য কুফায় গুপ্তচরদের নিয়োগ কর ও তাদের গ্রেফতার কর। যে কোন অজুহাতে হোক তার অনুসারীদের বন্দি কর। আর কুফায় যা-ই ঘটে না কেন, আমাকে অবহিত কর। তোমার ওপর আল্লাহ্ রহমত বর্ষিত হোক।’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>ইবনে আসাকির বর্ণনা করেছেন : ‘যখন ইয়াযীদ জানতে পারে যে, ইমাম হুসাইন কুফার দিকে রওয়ানা হয়েছেন তখন সে ইবনে যিয়াদের নিকট দূত প্রেরণ করে নির্দেশ দেয় তাঁর সাথে যুদ্ধ করার ও তাঁকে (জীবিত অথবা মৃত) সিরিয়ায় পাঠানোর।’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b><br /></b></span> <span style="color: #660000;"><b>ইবনে আসামের বর্ণনায় এসেছে : ইবনে যিয়াদ গভর্নর হিসেবে কুফায় প্রবেশের পরই কুফার জনগণের উদ্দেশে বক্তব্যে বলে : ‘ইয়াযীদ ইবনে মুআবিয়া আমার নিকট পত্র এবং চার হাজার দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) ও দুই লক্ষ দিরহাম প্রেরণ করে এ অর্থ তোমাদের মধ্যে বিতরণ করার নির্দেশ দিয়েছে। সে আরও নির্দেশ দিয়েছে যে, আমি যেন তোমাদেরকে তার শত্রু হুসাইন ইবনে আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠাই এবং তোমাদের তার আনুগত্যের দাওয়াত দেই।’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b><br /></b></span> <span style="color: #660000;"><b>আল্লামা সুয়ূতী লিখেছেন : ‘ইয়াযীদ এক পত্রে তার নিযুক্ত কুফার গভর্নর ইবনে যিয়াদকে হুসাইনের সঙ্গে যুদ্ধের ও তাঁকে হত্যার নির্দেশ দেয়।’</b></span><br /> <span style="color: #660000;"><b>এ বর্ণনাগুলো থেকে স্পষ্ট হয় যে, কুফায় যা কিছু ঘটত, ইয়াযীদ সে বিষয়ে শুধু অবহিতই ছিল না; বরং ইবনে যিয়াদ যা করত তা তার নির্দেশ অনুযায়ী ও তার অনুমতি সাপেক্ষেই করত। ফলে ইবনে যিয়াদের কর্মের দায় প্রথমত ইয়াযীদের ওপরই বর্তায়।</b></span><br /> <br /> <br /> <br /> <br /> <span style="color: purple;"><b><br /></b></span> <span style="color: purple;"><b>৫. </b></span><br /> <span style="color: purple;"><b><br /></b></span> <span style="color: purple;"><b>ইমাম হুসাইন (আ.)-এর হত্যায় ইয়াযীদ আনন্দ ও দম্ভ প্রকাশ করেছিল</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b>ইবনে আসাম, আবুল ফারাজ ইসফাহানী এবং ইবনে কাসির বর্ণনা করেছেন যে, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কর্তিত পবিত্র মাথা ইয়াযীদের নিকট নেয়া হলে সে আনন্দিত হয়ে ইবনে যেবারার নিম্নোক্ত কবিতাটি আবৃত্তি করে তার মনোভাব প্রকাশ করে :</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b><br /></b></span> <span style="color: purple;"><b>لعبت هاشم بالملک فلا خبر جاء و لا وحی نزل</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b>لستُ مِن خندف ان لم انتقم مِن بنی احمد ما کان فعل</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b>قد قتلنا قرم ساداتهم و عدلنا میل بدر فاعتدل</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b><br /></b></span> <span style="color: purple;"><b>‘বনি হাশিম রাজত্ব নিয়ে খেলা করেছে। প্রকৃতপক্ষে কোন ঐশী বার্তাও আসেনি, আর কোন ওহীও অবতীর্ণ হয়নি। আমি যদি বনি আহমাদ অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সা.)-এর বংশধরদের থেকে যা সে করেছিল তার প্রতিশোধ না নেই তবে আমি খিনদিফের (সন্তানদের) অন্তর্ভুক্ত নই। নিশ্চয় আমরা তাদের নেতাদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়কে হত্যা করেছি এবং বদরের (নিহতের প্রতিশোধ গ্রহণ করে) সমান সমান হয়েছি।’</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b>এ কবিতায় ইয়াযীদ রাসূল (সা.)-এর নবুওয়াতকে অস্বীকার করেছে এবং ইমাম হুসাইনের হত্যাকে বদরের যুদ্ধের প্রতিশোধ বলে উল্লেখ করেছে। এভাবে সে তার অন্তরের বিশ্বাসকেই ব্যক্ত করেছে।</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b>ইবনে আসির বর্ণনা করেছেন : ‘হুসাইনের শাহাদাতের পর তাঁর পবিত্র মাথা ইয়াযীদের কাছে প্রেরিত হলে সে তার হাতের লাঠি দিয়ে তাঁর গলায় আঘাত করে কবিতা পাঠ করছিল।’</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b>যদি ইয়াযীদ ইমাম হুসাইনের হত্যায় সন্তুষ্ট না হয়ে থাকে তবে কেন তাঁর গলায়, কোন কোন বর্ণনা মতে পবিত্র ঠোঁট ও দাঁতে আঘাত করে দম্ভের সাথে কবিতা আবৃত্তি করছিল। এ ঘটনায় ইমাম হুসাইনের প্রতি তার বিদ্বেষ সুস্পষ্টরূপে প্রকাশিত হয়েছে।</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b><br /></b></span> <span style="color: purple;"><b>আল্লামা সুয়ূতী লিখেছেন : ‘ইমাম হুসাইন ও তাঁর পিতার বংশের লোকদের হত্যার পর ইবনে যিয়াদ তাঁদের মস্তকগুলোকে সিরিয়ায় প্রেরণ করলে ইয়াযীদ প্রথমে আনন্দিত হয়, কিন্তু পরে যখন মুসলমানদের মধ্যে তার প্রতি অসন্তোষ ও ঘৃণার আশংকা করল তখন সে বাহ্যিকভাবে অনুশোচনা প্রকাশ করে। সুতরাং মানুষের ইয়াযীদের প্রতি ক্ষুব্ধ হওয়ার অধিকার রয়েছে।’</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b><br /></b></span> <span style="color: purple;"><b>৬. </b></span><br /> <span style="color: purple;"><b><br /></b></span> <span style="color: purple;"><b>ইমাম হুসাইনকে হত্যার পর ইয়াযীদ ইবনে যিয়াদকে পুরস্কৃত করেছিল</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b>ইমাম হুসাইনকে হত্যার পর ইয়াযীদ, ইবনে যিয়াদকে তার পদে শুধু বহালই রাখেনি; বরং এ ঘটনার কয়েক মাস পর যখন সে তার সঙ্গে সিরিয়ায় দেখা করতে যায় তখন সে ইবনে যিয়াদকে আলিঙ্গন করে তার কপালে চুম্বন করে নিজ সিংহাসনের পাশে বসায় এবং এক গায়ককে তাকে সম্বর্ধনা দানের জন্য গান গাইতে বলে। সে তার সাকীকে মদ পরিবেশনের নির্দেশ দেয়। অতঃপর সে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ইবনে যিয়াদ ও ওমর ইবনে সাদকে দশ লক্ষ দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা) দান করে। এমনকি সে এক বছরের জন্য ইবনে যিয়াদকে ইরাকের (কুফা ও বসরার) বার্ষিক খাজনার পুরোটাই গ্রহণের অনুমতি দেয়।</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b><br /></b></span> <span style="color: purple;"><b>ইবনে আসির লিখেছেন : ‘ইমাম হুসাইনকে হত্যা করার পর ইবনে যিয়াদ তাঁর পবিত্র মস্তক ইয়াযীদের নিকট প্রেরণ করলে সে তার প্রতি খুবই খুশী হয়। কিন্তু যখন সে বুঝতে পারে যে, জনগণ তার এ কর্মে সন্তুষ্ট নয় তখন কৃত্রিমভাবে শোক প্রকাশ শুরু করে। এ কারণেই ইয়াযীদ তার মৃত্যু পর্যন্ত তাকে কুফার গভর্নর হিসেবে বহাল রাখে। এমনকি ইবনে যিয়াদই কুফার মিম্বারে ইয়াযীদের মৃত্যুর ঘোষণা দেয়।’</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b>তাবারীও ইমাম হুসাইনকে হত্যা করার পর ইয়াযীদের নিকট ইবনে যিয়াদের মর্যাদা বৃদ্ধির বিষয় বর্ণনা করেছেন।</b></span><br /> <span style="color: purple;"><b><br /></b></span> <b></b><br /> <div style="color: purple;"> <b><br /></b></div> <div style="color: purple;"> <b>৭. </b></div> <div style="color: purple;"> <b><br /></b></div> <div style="color: purple;"> <b>আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস ইয়াযীদকে ইমাম হুসাইনকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন</b></div> <div style="color: purple;"> <b>ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদাতের পর আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস ইয়াযীদকে এক পত্রে লিখেন : ‘হে অবৈধ সন্তান! তুমিই হলে সেই ব্যক্তি যে তার পাপিষ্ঠ ও কলুষ হাত দিয়ে হুসাইনকে হত্যা করেছে। আমি কখনই এ কথা ভুলে যাইনি যে, তোমার হাত রক্তে রঞ্জিত। তুমি হুসাইনসহ বনি হাশিমের এমন ব্যক্তিদের হত্যা করেছ যাঁরা সকলেই উজ্জ্বল, দীপ্তিময় আলো এবং অন্ধকারে নিপতিতদের জন্য পথপ্রদর্শক তারকাস্বরূপ ছিলেন।’</b></div> <div style="color: purple;"> <b>ইবনে আব্বাস একজন প্রসিদ্ধ সাহাবী এবং মহানবীর চাচা হযরত আব্বাসের সন্তান। তিনি কারবালার ঘটনার সময় জীবিত ছিলেন এবং ঐ ঘটনা সংঘটনের (আশুরার) দিনে তিনি দ্বিপ্রহরে স্বপ্ন দেখেন যে, রাসূলুল্লাহ্্ (সা.) ক্রন্দনরত ও দুঃখভারাক্রান্ত অবস্থায় কারবালা ময়দান থেকে ইমাম হুসাইনের রক্ত সংগ্রহ করছেন। স্বপ্নেই রাসূল (সা.) তাঁকে ইমাম হুসাইনের শাহাদাতের সংবাদ দেন। নিঃসন্দেহে তিনি ইয়াযীদকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করেননি।</b></div> <div style="color: purple;"> <b><br /></b></div> <div style="color: purple;"> <b>৮. </b></div> <div style="color: purple;"> <b><br /></b></div> <div style="color: purple;"> <b>কারবালার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হযরত যায়নাব বিনতে আলী (আ.) ইয়াযীদের সামনেই তাকে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর হত্যাকারী বলেছেন</b></div> <div style="color: purple;"> <b>মহানবী (সা.)-এর বংশের বন্দি নারী, শিশুসহ তাঁর আহলে বাইতের মহান ব্যক্তিদের পবিত্র মস্তকগুলো নিয়ে যখন ইবনে যিয়াদের সৈন্যরা সিরিয়ায় পৌঁছে তখন ইয়াযীদ তাদেরকে তার সামনে উপস্থিত করার নির্দেশ দেয়। ইমাম হুসাইনের পবিত্র মস্তকের ওপর ইয়াযীদের দৃষ্টি পড়া মাত্রই সে তার হাতের লাঠি দিয়ে তাঁর পবিত্র গলা, ঠোঁট ও দাঁতে আঘাত করতে থাকে এবং ইবনে যেবারার কবিতাটি আওরাতে থাকে। এ দৃশ্য দেখে হযরত যায়নাব ইয়াযীদের উদ্দেশে অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে তার ইসলামের বাহ্যিক মুখোশ উন্মোচন করেন। তিনি ইয়াযীদের সকল কর্মকা-কে অনৈসলামিক এবং ব্যক্তিগত বিদ্বেষ ও গোত্রীয় আক্রোশপ্রসূত প্রমাণ করে এক দীর্ঘ বাগ্মিতাপূর্ণ বক্তব্য দান করেন। বক্তব্যের এক স্থানে তিনি বলেন :</b></div> <div style="color: purple;"> <b><br /></b></div> <div style="color: purple;"> <b>‘হে ইয়াযীদ! তুই এ মহাঅপরাধ করার পর নিজেকে পাপী ও অপরাধী না ভেবে এবং এ অপরাধ কত বড় তা চিন্তা না করে বলছিস : ‘হায়! আমার পিতারা যদি এখানে উপস্থিত থাকত।’ তুই কি মনে করেছিস তারা এ কথা শুনে আনন্দে অভিভূত হয়ে তোকে বলত : ‘হে ইয়াযীদ! তোর হাত পঙ্গু না হোক।’ তুই এ ধরনের ঔদ্ধত্যমূলক কথা বলছিস এবং বেহেশতের যুবকদের সর্দারের দাঁতে আঘাত করছিস! তুই কতটা নির্লজ্জ! হ্যাঁ, এরূপ উদ্ভট ও অসংগত কথা তোর জন্যই সাজে। কারণ, তুই হচ্ছিস ঐ ব্যক্তি যে পূর্বের ক্ষতকে উন্মুক্ত করেছিস এবং যার হাত মুহাম্মাদ (সা.)-এর বংশধরদের রক্তে রঞ্জিত। তুই আবদুল মুত্তালিবের বংশের তারকাদের হত্যা করেছিস এবং আমাদের মূলকে কর্তন করেছিস। আর এখন আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে পূর্বপুরুষদের ডাকছিস, আর ভাবছিস ওরা তোর আহ্বান শুনতে পাচ্ছে। শীঘ্রই তুইও তাদের সাথে মিলিত হবি এবং এমন শাস্তির সম্মুখীন হবি যে, তখন আকাক্সক্ষা করবি, যদি পূর্বেই তোর হাতগুলো পঙ্গু, আর তোর জিহ্বা মূক হয়ে যেত।’</b></div> <div style="color: purple;"> <b><br /></b></div> <br /> <b><span style="color: #4c1130;"><br /></span></b> <b><span style="color: #4c1130;">৯. </span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;"><br /></span></b> <b><span style="color: #4c1130;">ইমাম যায়নুল আবেদীন (আ.) ইয়াযীদকে তাঁর পিতার হত্যাকারী বলে সম্বোধন করেছেন</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;">ইমাম যায়নুল আবেদীনও সিরিয়ায় অবস্থানকালে ইয়াযীদের উপস্থিতিতে কয়েকবার তাকে তাঁর পিতার হত্যাকারী বলে অভিহিত করেছেন। ইয়াযীদ ইমাম সাজ্জাদকে উদ্দেশ করে যখন বলে : ‘তুমি কি ঐ ব্যক্তির সন্তান যাকে আল্লাহ্ হত্যা করেছেন?’ ইমাম জবাবে বলেন : ‘আমি হলাম আলী, যার পিতাকে তুমি হত্যা করেছ।’ অতঃপর তিনি পবিত্র কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতটি তেলাওয়াত করেন :</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;"><br /></span></b> <b><span style="color: #4c1130;">وَ مَن يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَلِدًا فِيهَا وَ غَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَ لَعَنَهُ وَ أَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;"><br /></span></b> <b><span style="color: #4c1130;">‘যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করে তার শাস্তি জাহান্নাম; সেখানে সে স্থায়ী হবে এবং আল্লাহ্ তার প্রতি ক্রোধান্বিত হবেন, তাকে লানত করবেন এবং তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।’</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;">যখন ইয়াযীদ লক্ষ্য করল যে, হযরত যায়নাব (আ.) এবং ইমাম যায়নুল আবেদীন (আ.)-এর বক্তব্য তার দরবারে উপস্থিত ব্যক্তিদেরও প্রভাবিত করছে এবং পরিবেশ তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে তখন সে তার মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বলে। মুয়াজ্জিন আজানে রাসূল (সা.)-এর রিসালাতের সাক্ষ্য দান শুরু করলে ইমাম তাকে থামার নির্দেশ দিয়ে ইয়াযীদকে উদ্দেশ করে বলেন : ‘হে ইয়াযীদ! যে মুহাম্মাদ (সা.)-এর কথা তুমি বলছ; সে কি তোমার পূর্বপুরুষ, না আমার? যদি তুমি তাঁকে নিজের পূর্বপুরুষ বলে দাবি কর, তবে তুমি মিথ্যা বলছ। আর যদি তিনি আমার পূর্বপুরুষ হন তবে কেন তুমি তাঁর বংশধরদের হত্যা করেছ?’</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;"><br /></span></b> <b><span style="color: #4c1130;">১০. </span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;"><br /></span></b> <b><span style="color: #4c1130;">ইয়াযীদ সম্পর্কে আহলে সুন্নাতের বিশিষ্ট আলেমদের দৃষ্টিভঙ্গি</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;">আহলে সুন্নাতের প্রসিদ্ধ কিছু সংখ্যক আলেম ইয়াযীদের কাফির হওয়াকে নিশ্চিত বলেছেন এবং তাকে লানত করা জায়েয বলেছেন এবং তারা নিজেরাও তাকে লানত করেছেন। তন্মধ্যে আহমাদ ইবনে হাম্বাল, ইবনে যাওযী, কাযী আবু ইয়ালী, জাহিয, আল্লামা তাফতাযানী এবং আল্লামা সুয়ূতীর নাম উল্লেখযোগ্য।</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;">আল্লামা তাফতাযানী বলেন : ‘ইমাম হুসাইনকে হত্যার পর ইয়াযীদের সন্তুষ্টি ও আনন্দ প্রকাশ এবং মহানবী (সা.)-এর আহলে বাইতের প্রতি তার নিকৃষ্ট আচরণ তার অসংখ্য মন্দ কর্মের কিছু নমুনা মাত্র যা বিভিন্ন গ্রন্থে ও সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। আমরা তার বংশের পরিচয় দেখব না; বরং তার ঈমানের প্রকৃত অবস্থা দেখব। মহান আল্লাহ্ তাকে ও তার পক্ষাবলম্বীদের লানত করুন।’</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;">ইয়াযীদের সকল গুরুতর অপরাধকে তুলে ধরে জাহিয বলেছেন : ‘এ বিষয়গুলো তার নিষ্ঠুরতা, কপটতা ও অধার্মিকতার প্রমাণ। নিঃসন্দেহে সে দুর্বৃত্ত ও অভিশপ্ত। যে কেউ তাকে সমর্থন করবে সে নিজেকেই অসম্মানিত করবে।’</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;">বারযানজী তাঁর ‘ইশাআ’ গ্রন্থে এবং হাইসামী তাঁর ‘সাওয়ায়েকুল মুহরিকা’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন : ‘আহমাদ ইবনে হাম্বলকে তাঁর পুত্র যখন বলেন যে, আল্লাহ্ কিতাবে আমি ইয়াযীদকে লানত করার সপক্ষে কোন দলিল পাই না। তখন তিনি পবিত্র কুরআনের সূরা মুহাম্মাদের ২২ ও ২৩ নং আয়াত দু’টি তেলাওয়াত করেন :</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;"><br /></span></b> <b><span style="color: #4c1130;">فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِن تَوَلَّيْتُمْ أَن أَن تُفْسِدُواْ فىِ الْأَرْضِ وَ تُقَطِّعُواْ أَرْحَامَكُم أُوْلَئكَ الَّذِينَ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فَأَصَمَّهُمْ وَ أَعْمَى أَبْصَرَهُمْ</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;"><br /></span></b> <b><span style="color: #4c1130;">‘তোমরা কি আশা কর যে, তোমরা কর্তৃত্বের অধিকারী হলে ভূপৃষ্ঠে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে থাকবে এবং তোমাদের আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে? (যারা এরূপ করবে) তারাই হল সে সকল লোক যাদের আল্লাহ্ অভিসম্পাত (স্বীয় রহমত হতে দূর) করেন এবং তাদের কর্ণে বধিরতা ও তাদের চক্ষুতে অন্ধত্ব সৃষ্টি করেছেন।’</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;">অতঃপর তিনি বলেন : ‘ইয়াযীদ যা করেছে তার থেকে বড় কোন বিপর্যয় ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার নমুনা আছে কি?’</span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;"><br /></span></b> <b><span style="color: #4c1130;">আল্লামা আলুসী বলেন : ‘যদি কেউ বলে ইয়াযীদের কোন দোষ ছিল না এবং সে কোন অপরাধ করেনি, তাই তাকে লানত করা যাবে না; নিঃসন্দেহে সে ইয়াযীদের অন্যতম সহযোগী এবং তার দলের অন্তর্ভুক্ত।’ </span></b><br /> <b><span style="color: #4c1130;"><br /></span></b> <br /> <ul style="text-align: left;"> <li><b><b><div style="display: inline !important;"> </div> <div style="display: inline !important;"> <span style="color: #4c1130;">তথ্যসূত্র</span></div> </b></b></li> <li><b><b><div style="display: inline !important;"> </div> <div style="display: inline !important;"> <span style="color: #4c1130;">১. তারিখে ইয়াকুবী, ২য় খ-, পৃ. ২৪১; ইবনে আসাম, আল ফুতুহ, ৩য় খ-, ৫ম অধ্যায়, পৃ. ১০-১১।</span></div> </b></b></li> <li><b><b><div style="display: inline !important;"> </div> <div style="display: inline !important;"> <span style="color: #4c1130;">২. ইবনে আসাম, আল ফুতুহ, ৩য় খ-, ৫ম অধ্যায়, পৃ. ১৫-১৮।</span></div> </b></b></li> </ul> <br /> <br /> <br /> <br /> </div>

ইমাম হুসাইন (রা) এর হত্যায় ইয়াজিদের ভুমিকা :

উমাইয়্যা বংশীয় খলিফা ইয়াযীদ ইবনে মু‘আবিয়া তার তিন বছরের শাসনামলে তিনটি বড় ধরনের অপরাধে লিপ্ত হয়েছিল। তার শাসনামলের প্রথম বছরে ত...

আরও পড়ুন »