নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২০ জুন, ২০১৮
২০ দলের সরব নেতারা এখন নীরব। রোজার মধ্যে তাঁদের চোখে পড়ার মতো তৎপরতা দেখা যায়নি। ঈদের পরও তাঁরা হাত পা গুটিয়ে বসে আছেন। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির লুকোচুরি খেলা, বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে ২০ দলকে যুক্ত না করা এবং বিএনপির কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বিএনপি এবং জামাতের বাইরে ২০ দলে সবচেয়ে সরব ছিলেন এলডিপির নেতা কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ। বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে প্রথম দিকে তিনি সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি মৌনব্রত অবলম্বন শুরু করছেন। মাঝে আগামী নির্বাচনে এখনই শরিকদের হিস্যার দাবি তোলেন। এ নিয়ে একটি কর্মী সভায় বিএনপির কঠোর সমালোচনাও করেন। তারপর অলি আহমেদের আর সাড়া শব্দ নেই। একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, বিএনপির উপর বেজায় ক্ষুব্ধ সাবেক এই বিএনপি নেতা। বিশেষ করে বিএনপির মহাসচিবের সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তফন্টের দিকে ঝুঁকে পড়ায় অসন্তুষ্ট অলি আহমেদ। তাছাড়া বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক মধুর নয়।
২০ দলের সাবেক আলোচিত নেতা জাতীয় কল্যাণ পার্টির লে. জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহিম। তিনি এক সময় ছিলেন সরকারের কঠোর সমালোচক। বিগম জিয়ার গ্রেপ্তার হওয়ার পর কয়েকদিন তাঁর দৃশ্যমান তৎপরতা দেখা গেলেও এখন নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। তিনিও ২০ দলের আসন ভাগাভাগি এখনই চূড়ান্ত করার দাবি তুলেছিলেন। ২০ দলে শরিকদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না এমন ক্ষুব্ধ উচ্চারণ তিনি করেছিলেন ২০ দলীয় জোটের সর্বশেষ বৈঠকে। এরপর রাজনীতির মাঠে জেনারেল ইব্রাহিমের কোনো তৎপরতা চোখে পড়ে না। অনেকেই মনে করেন, বিএনপির উপর অভিমান করেই তিনি দূরে আছেন।
২০ দলের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয় বিজেপির নেতা আন্দালিব রহমান পার্থকে। প্রধানমন্ত্রীর নিকটাত্মীয় হয়েও তাঁর প্রাণবন্ত বক্তব্য এবং সরকারের সমালোচনা তাঁকে আলোচিত করে। বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ হতেও তাঁর সময় লাগেনি। যুক্তিবাদী বক্তা হিসেবে তরুণদের মধ্যে পার্থ বেশ জনপ্রিয়। বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হবার পরও তিনি কয়েকদিন বেশ সরব ছিলেন। প্রথম দিকের কয়েকটি কর্মসূচিতেও তাঁকে দেখা যায়। কিন্তু মাস না পেরুতেই নিজেকে গুটিয়ে নেন পার্থ। তবে তাঁর গুটিয়ে যাওয়া নিয়ে ২০ দলেই নানা মত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, পার্থ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নিজেকে আড়ালে নিয়ে গেছেন। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।
২০ দলের আলোচিত এই তিন নেতার ‘স্বেচ্ছা অবসর’ নিয়ে নানা রকম কথাবার্তা আছে। অধিকাংশ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মনে করেন, ২০ দলকে বিএনপি অকার্যকর করে রেখেছে। এ জন্যই অভিমানে তিনজন চুপচাপ হয়ে গেছেন। অবশ্য কেউ কেউ মনে করে, এই তিন নেতার সঙ্গেই সরকারের গোপন সখ্যতা হয়েছে। সে কারণেই এরা এখন নীরব। নির্বাচনে বিএনপি যাক না যাক এরা যাবেই। একারণেই সরকার এত জোর গলায় বলছে, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও আগামী নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক।
Read in English- https://bit.ly/2M9pmrw
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।